সু চিকে কক্সবাজারে আসার আহ্বান
মিয়ানমারে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞের’ ভয়াবহতায় জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা চার লক্ষাধিক রোহিঙ্গার দুর্দশায় উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলা এবং তাদের অবর্ণনীয় দুর্দশা দেখতে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি’কে কক্সবাজার সফরের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব সংস্থাটির সাতজন বিশেষজ্ঞ। একইসঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত এ জনগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়ন বন্ধে বার্মিজ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনের এক বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড, মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ, নির্যাতন ও অপব্যবহার, যৌন সহিংসতা, লোকজনকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা, দুই শতাধিক রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া, সেখানে তাণ্ডব চালানোর মতো বিষয়গুলো রয়েছে। ১০ হাজার ঘরবাড়ি এই অগ্নিসংযোগ ও তাণ্ডবের শিকার হয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’র কাজের জন্য পুরো রোহিঙ্গা সম্প্রদায় মূল্য দিতে পারে না।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ১৯ সেপ্টেম্বর দেওয়া ভাষণে মিয়ানমারের পরিস্থিতি অনুধাবনের জন্য সু চি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অথচ গত কয়েক সপ্তাহেই চার লাখ ৩০ হাজার মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে গেছেন। রাখাইন ও কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য আমরা সু চি’র প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সদিচ্ছা থাকলে পালিয়ে আসা মানুষদের কথা তার শোনা উচিত।
এদিকে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমনপীড়নকে মানবতাবিরোধী অপরাধ আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এইচআরডব্লিউ। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তারা এই পর্যবেক্ষণ হাজির করে। হত্যা-ধর্ষণ-উচ্ছেদের বিপুল আলামত পাওয়ার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি ক্ষেত্র শনাক্ত করেছে এইচআরডব্লিউ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে ২০১২ এবং ২০১৬ সালে উগ্র বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং রাখাইনের বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্তরা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাকাণ্ড চালায়। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত- আইসিসির রোম স্ট্যাচু এর সংজ্ঞা অনুযায়ী, মানবতাবিরোধী অপরাধ হলো এমন এক উদ্দেশ্যমূলক কর্মকাণ্ড যা বেসামরিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিস্তৃত ও কাঠামোবদ্ধ হামলার মধ্য দিয়ে সংঘটিত হয়। এ ধরনের হামলা অবশ্যই রাষ্ট্রীয় অথবা সাংগঠনিক নীতির অংশ হতে হবে। আন্তর্জাতিক আইনি বিচারব্যবস্থা অনুযায়ী এ হামলা হতে হবে বিস্তৃত অথবা কাঠামোবদ্ধ। হামলার বিস্তৃতর মানে হলো ‘অপরাধের মাত্রা কিংবা ঘটনার শিকার মানুষদের সংখ্যা’ এবং কাঠামোবদ্ধ হামলা দিয়ে বোঝায় ‘পদ্ধতিগত পরিকল্পনা’।
আন্তর্জাতিক মানবতাবিষয়ক আইনে বলা আছে মানবতাবিরোধী অপরাধ যে কেবল সামরিক হামলার ক্ষেত্রে হবে তা নয়। কারণ, মানবতাবিরোধী অপরাধ সশস্ত্র সংঘাতমুলক প্রেক্ষাপটের মধ্যে কিংবা এর বাইরেও হতে পারে। তাছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধ মানে যে কেবল একটি এলাকার গোটা জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা পরিচালনা করা, তা নয়। হিউম্যান রাউটস ওয়াচ মনে করে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর বিস্তৃত ও কাঠামোবদ্ধ হামলা চালিয়েছে। পূর্বে স্যাটেলাইটে ধারণকৃত ছবিতে দেখা গেছে যে এলাকায় জ্বালাও পোড়াও এর আলামত পাওয়া গেছে তা রাখাইন রাজ্যের ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে নভেম্বরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জ্বালাও পোড়াও এর তৎপরতা নির্দিষ্ট এলাকা থেকে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনের বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা বিশেষজ্ঞরা হচ্ছেন মিয়ানমারে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিস্থিতি-সংক্রান্ত বিশেষ দূত ইয়াংঘি লি, বিচারবর্হিভূত বা নির্বিচার হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত বিশেষ দূত এগনেস ক্যালামার্ড, সংখ্যালঘু বিষয়ক বিশেষ দূত ফার্নান্ড ডে ভেরেনেস, গৃহায়ন ও জীবনযাত্রা বিষয়ক দূত লেইলানি ফারহা, অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার বিষয়ক দূত সিসিলিয়া জিমেনেজ, সমসাময়িক বর্ণবাদ বিশেষজ্ঞ মুতুমা রুতেরে, ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতা বিষয়ক বিশেষ দূত আহমেদ শাহিদ।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।
বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড, মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ, নির্যাতন ও অপব্যবহার, যৌন সহিংসতা, লোকজনকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা, দুই শতাধিক রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া, সেখানে তাণ্ডব চালানোর মতো বিষয়গুলো রয়েছে। ১০ হাজার ঘরবাড়ি এই অগ্নিসংযোগ ও তাণ্ডবের শিকার হয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’র কাজের জন্য পুরো রোহিঙ্গা সম্প্রদায় মূল্য দিতে পারে না।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ১৯ সেপ্টেম্বর দেওয়া ভাষণে মিয়ানমারের পরিস্থিতি অনুধাবনের জন্য সু চি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অথচ গত কয়েক সপ্তাহেই চার লাখ ৩০ হাজার মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে গেছেন। রাখাইন ও কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য আমরা সু চি’র প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সদিচ্ছা থাকলে পালিয়ে আসা মানুষদের কথা তার শোনা উচিত।
এদিকে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমনপীড়নকে মানবতাবিরোধী অপরাধ আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এইচআরডব্লিউ। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তারা এই পর্যবেক্ষণ হাজির করে। হত্যা-ধর্ষণ-উচ্ছেদের বিপুল আলামত পাওয়ার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি ক্ষেত্র শনাক্ত করেছে এইচআরডব্লিউ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে ২০১২ এবং ২০১৬ সালে উগ্র বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং রাখাইনের বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্তরা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাকাণ্ড চালায়। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত- আইসিসির রোম স্ট্যাচু এর সংজ্ঞা অনুযায়ী, মানবতাবিরোধী অপরাধ হলো এমন এক উদ্দেশ্যমূলক কর্মকাণ্ড যা বেসামরিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিস্তৃত ও কাঠামোবদ্ধ হামলার মধ্য দিয়ে সংঘটিত হয়। এ ধরনের হামলা অবশ্যই রাষ্ট্রীয় অথবা সাংগঠনিক নীতির অংশ হতে হবে। আন্তর্জাতিক আইনি বিচারব্যবস্থা অনুযায়ী এ হামলা হতে হবে বিস্তৃত অথবা কাঠামোবদ্ধ। হামলার বিস্তৃতর মানে হলো ‘অপরাধের মাত্রা কিংবা ঘটনার শিকার মানুষদের সংখ্যা’ এবং কাঠামোবদ্ধ হামলা দিয়ে বোঝায় ‘পদ্ধতিগত পরিকল্পনা’।
আন্তর্জাতিক মানবতাবিষয়ক আইনে বলা আছে মানবতাবিরোধী অপরাধ যে কেবল সামরিক হামলার ক্ষেত্রে হবে তা নয়। কারণ, মানবতাবিরোধী অপরাধ সশস্ত্র সংঘাতমুলক প্রেক্ষাপটের মধ্যে কিংবা এর বাইরেও হতে পারে। তাছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধ মানে যে কেবল একটি এলাকার গোটা জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা পরিচালনা করা, তা নয়। হিউম্যান রাউটস ওয়াচ মনে করে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর বিস্তৃত ও কাঠামোবদ্ধ হামলা চালিয়েছে। পূর্বে স্যাটেলাইটে ধারণকৃত ছবিতে দেখা গেছে যে এলাকায় জ্বালাও পোড়াও এর আলামত পাওয়া গেছে তা রাখাইন রাজ্যের ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে নভেম্বরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জ্বালাও পোড়াও এর তৎপরতা নির্দিষ্ট এলাকা থেকে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনের বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা বিশেষজ্ঞরা হচ্ছেন মিয়ানমারে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিস্থিতি-সংক্রান্ত বিশেষ দূত ইয়াংঘি লি, বিচারবর্হিভূত বা নির্বিচার হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত বিশেষ দূত এগনেস ক্যালামার্ড, সংখ্যালঘু বিষয়ক বিশেষ দূত ফার্নান্ড ডে ভেরেনেস, গৃহায়ন ও জীবনযাত্রা বিষয়ক দূত লেইলানি ফারহা, অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার বিষয়ক দূত সিসিলিয়া জিমেনেজ, সমসাময়িক বর্ণবাদ বিশেষজ্ঞ মুতুমা রুতেরে, ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতা বিষয়ক বিশেষ দূত আহমেদ শাহিদ।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।
Comments
Post a Comment