সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর তড়িৎ বিশ্লেষণ
ক) ইলেকট্রোপ্লেটিং
তড়িৎ বিশ্লেষণের মাধ্যমে সক্রিয় ধাতুর উপর অপেক্ষাকৃত কম সক্রিয় ধাতুর প্রলেপ দেওয়াকে ইলেকট্রোপ্লেটিং বা তড়িৎ প্রলেপন বলে।
খ) তড়িৎ রাসায়নিক কোষে লবণসেতু ব্যবহার করা হয় তার কারণঃ
Ø লবণ সেতুর মাধ্যমে ২টি অর্ধ-কোষের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হয়।
Ø লবণ সেতুর মাধ্যমে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় আয়নের সমতা রক্ষিত হয়।
Ø লবণ সেতুর মাধ্যমে কোষ বর্তনী পূর্ণ হয় এবং তড়িৎ চালিত হয়।
গ) উপরের (i) নং বিক্রিয়া হতে প্রাপ্ত শক্তি গাড়ি চালনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়।
উদ্দীপকের (i) নং বিক্রিয়াটি হচ্ছেঃ
পেট্রোলিয়াম + O2 = CO2 + H2O + শক্তি
উপরোক্ত সমীকরণ হতে দেখা যায় যে, এখানে পেট্রোলিয়ামে দহন ঘটেছে এবং প্রচুর তাপ শক্তি উৎপন্ন হয়েছে। এই তাপ শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরের মাধ্যমে গাড়ি চালানো সম্ভব। কাজ করার ক্ষমতা হল শক্তি। আর জ্বালানি পোড়ালে তাপ উৎপন্ন হয়। আর সেই তাপকে কাজে লাগিয়ে মোটর গাড়ি, রেলগাড়িসহ অন্যান্য তাপীয় ইঞ্জিন চালনা করা যায়।
এখানে পেট্রোলিয়াম এক ধরনের জ্বালানী যার দহনের মাধ্যমে প্রচুর তাপ শক্তি পাওয়া। তাই এই বিক্রয়াটির মাধ্যমে গাড়ি চালানো সম্ভব।
ঘ) তাপশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা সম্ভব। উদ্দীপকে উল্লেখিত সবগুলো বিক্রিয়ায় তাপ উৎপন্ন হয়েছে। এর মধ্যে (i) নং বিক্রিয়ায় পেট্রোলিয়ামে দহনের মাধ্যমে তাপ উৎপন্ন হয়েছে। (ii) নং বিক্রিয়ায় তেজস্ক্রিয় ইউরেনিয়ামকে নিউট্রন দ্বারা আঘাত করায় তাপ উৎপন্ন হয়েছে। আর (iii) নং বিক্রিয়ায় তড়িৎ বিশ্লেষনের মাধ্যমে সরাসরি বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়েছে ।
পারমাণবিক চুল্লীতে 1 মোল ইউরেনিয়াম হতে 2×1013 J তাপ উৎপন্ন হয়। যা অত্যন্ত লাভজনক । কিন্তু পারমাণবিক চুল্লীর সাহায্যে তাপ উৎপাদন খুবই ব্যয় সাপেক্ষ ও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ইহা জনবহুল ক্ষুদ্র আয়তনের বাংলাদেশে জন্য মোটেই উপযোগী নয়।
তড়িৎ বিশ্লেষন অর্থাৎ গ্যালভানিক সেলের মাধ্যমে প্রাপ্ত বিদ্যুৎ দ্বারা টর্চ জ্বালানো, বাল্ব জ্বালানো, টিভি দেখা ইত্যাদি করা সম্ভব হলেও বড় কোন কাজ করা সম্ভব নয়। তাই বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের জন্য ইহা অনুপযোগী।
প্রক্ষান্তরে (i) নং বিক্রিয়ায় পেট্রোলিয়ামে দহনের মাধ্যমে উৎপন্ন তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা যেতে পারে। বাংলাদেশ মোটামোটি পেট্রোলিয়াম সমৃদ্ধ দেশ হওয়ায় এই প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বেশি উপযোগী।
সৃজনশীল প্রশ্ন-২ এর উত্তর
ক) ধাতব পরিবাহীঃ যে সকল পদার্থ কঠিন অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহণ করে ধাতব বা ইলেক্ট্রনীয় পরিবাহী বলে।
খ) যে সকল পদার্থ আয়নীত অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহন করে তাদেরকে তড়িৎ বিশ্লেষ্য বলে। সাধারন পানি বিদ্যুৎ কুপরিবাহী।এর সাথে অল্প পরিমাণ সালফিউরিক এসিড যোগ করলে ইহা বিদ্যুৎ পরিবহন করে। অ্যানোডে পানির অনু জারিত হয়ে অক্সিজেন গ্যাস, হাইড্রোজেন আয়ন ও ইলেকট্রন উৎপন্ন করে। অপরদিকে ক্যাথোডে হাইড্রোজেন আয়ন বিজারিত হয়ে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে। পানির ত্যাগকৃত ইলেকট্রন তার দিয়ে ক্যাথোডে পৌছায়। অর্থাৎ এসিড মিশ্রিত পানি তড়িৎ বিশ্লেষ্য পরিবাহী।
গ) উপরের কোষে গলিত MgCl2 এর তড়িৎ বিশ্লেষণ দেখানো হয়েছে। বিগলিত MgCl2 এর তড়িৎ বিশ্লেষণ বিক্রিয়ায় Mg+2 এবং Cl- আয়ন পাওয়া যায়।
ক্যাটায়ন অ্যানায়ন
Mg+2 Cl-
বিদ্যুৎ পরিবহণ করলে অ্যানোড কতৃক ঋণাত্মক Cl- আয়ন আকৃষ্ট হবে। Cl- আয়ন অ্যানোডে গিয়ে ইলেকট্রন ত্যাগ করে ক্লোরিন গ্যাসে রুপান্তরিত হয়।
আবার ক্যাথোড কতৃক ধনাত্মক Mg+2 আয়ন আকৃষ্ট হবে। Mg+2 আয়ন ক্যাথোডে গিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইলেকট্রন গ্রহন করে ম্যাগনেসিয়াম ধাতুতে পরিণত হয়
ঘ) উদ্দীপকে একটি তড়িৎ বিশ্লেষণ কোষ দেখানো হয়েছে । উল্লেখিত কোষে বাইরের উৎস থেকে পরিবাহিত বিদ্যুৎ রাসায়নিক শক্তিতে পরিণত হয়। অনেক রাসায়নিক বিক্রিয়া আছে যেগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটে না। এই বিক্রিয়া সংঘটনের জন্য বিদ্যুৎ প্রবাহের প্রয়োজন হয়।
উদ্দীপকের কোষটিতে বাইরে থেকে বিগলিত MgCl2 এ নিমজ্জিত তড়িৎদ্বার গুলো ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নকে
আকর্ষণ করতে পারে না। ফলে MgCl2 হতে সৃষ্ট Mg+2 ও Cl- আয়নসমূহ অপরিবর্তিত থেকে যায় এবং কোন
বিক্রিয়া ঘটে না।
প্রক্ষান্তরে উক্ত কোষে বিদ্যুৎ প্রবাহ চালনা করলে Mg+2 ক্যাথোড কতৃক আকৃষ্ট হবে এবং সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইলেকট্রন গ্রহন করে ম্যাগনেসিয়াম ধাতুতে পরিণত হবে। আবার Cl- আয়ন অ্যানোড কতৃক আকৃষ্ট হবে এবং সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইলেকট্রন ত্যাগ করে ক্লোরিন গ্যাসে পরিণত হয়।
সুতরাং উপরের বিক্রিয়া সংঘটনের জন্য তড়িৎ প্রবাহ একান্ত আবশ্যক।
Comments
Post a Comment