এবার বাংলাদেশিদের উপর হামলা চালাচ্ছে মিয়ানমারের বাহিনী
মিয়ানমারে চলমান সহিংসতায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে এসেছে। গত ২৫ আগস্ট রাতে রাখাইনে কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়ি ও তল্লাশিচৌকিতে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। ওই হামলার জেরে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সেনা অভিযান শুরু হয়। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে।
তবে এবার বাংলাদেশিদের উপর হামলা চালাচ্ছে মিয়ানমারের বাহিনী। সমকালের সংবাদের বরাতে এর বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
সাগরের বুকে মাছ ধরছিল ওরা। হঠাৎ গুলি করতে করতে জেলে নৌকাটি থামিয়ে তাতে উঠে এলো মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। প্রচন্ড মারধর করতে লাগল বাংলাদেশি জেলেদের। পিটিয়ে ভেঙে ফেলল মো. সাদ্দামের (২৬) দুই হাত ও দুই পা। রাইফেল দিয়ে আঘাত করতে করতে তার মাথা ফাটাল। প্রচুর রক্তপাতে জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন সাদ্দাম। তাকে সাগরের বুকে ফেলে দিল বিজিপি সদস্যরা। উত্তাল সাগরে সঙ্গে সঙ্গে ডুবে গেলেন সাদ্দাম।
এবার জেলেদের দিকে ফিরে সরাসরি গুলি চালাতে লাগল ওরা। আতঙ্কিত জেলেরা সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লেন সাগরের বুকে। তাদের মধ্যে কবীর আহম্মেদ ও মোহাম্মদ হোসেন সাঁতরে নাফ নদের অনেকটা ভেতরে চলে আসতে পারেন। পরে একটি জেলে নৌকা উদ্ধার করে তাদের। গত সোমবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে বঙ্গোপসাগর ও নাফ নদের মোহনা নাইক্ষ্যংদিয়াতে।
এভাবে মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা এবার অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করেছে নিরীহ বাংলাদেশি জেলেদের ওপর। গত তিন দিনে কমপক্ষে ৬টি জেলে নৌকার ওপর গুলি চালিয়েছে তারা।
গত সোমবারের ঘটনায় নিহত যুবক সাদ্দাম টেকনাফ শহরের দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনরা কাঁদছেন। সাদ্দামের দুটি শিশুসন্তান তখনও বুঝতে পারেনি কী ঘটেছে। তারা তাদের বাবার জন্য অপেক্ষা করছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীর কথা: নিষ্ঠুরতার শিকার ওই নৌকা থেকে পালিয়ে আসা যুবক কবীর আহম্মেদের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার সকালে কথা হয়। তিনি তখন টেকনাফ পৌর এলাকার শিলবনিয়া পাড়ায় নিজের বাসায় শুয়ে কাতরাচ্ছিলেন। তার সারা শরীরে মারধরের দাগ। দীর্ঘ পথ সাঁতরে অনেকটা ক্লান্তও তিনি। মাত্র ১৪ ঘণ্টা আগে যে বিভীষিকা নেমে এসেছিল, সে সবের দুঃসহ স্ট্মৃতি অসুস্থ করে তুলেছে তাকে। সাদ্দামকে নিজের চোখে খুন হতে দেখেছেন তিনি।
কবীর জানান, পেশায় জেলে হলেও তার নিজের কোনো নৌকা নেই। স্থানীয় জেলে মোহাম্মদ হোসেনের নৌকায় মজুরি খাটেন তিনি। গত সোমবার সকালে মোহাম্মদ হোসেন (৩০) মাছ কিনতে নৌকা নিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যান।
তিনিসহ মোট পাঁচজন নৌকার মালিকের সঙ্গে ছিলেন তখন। হোসেন এবং কবীর ছাড়াও ছিলেন নৌকার চালক আবদুল্লাহ (২৭), মোহাম্মদ সালাম (২৪), কবীর আহম্মেদ (২৬) ও সাদ্দাম (২৬)। সকাল ৯টায় তারা নৌকা নিয়ে কায়েকখালী বাজার থেকে সেন্টামার্টিনের উদ্দেশে রওনা হন। মাছ কিনে বিকেল ৩টায় ফেরার সময় তাদের সঙ্গে সেন্টমার্টিন থেকে পরিচিত আবুল হাশেমও (২৯) যোগ দেন।
ছয়জনকে নিয়ে ইঞ্জিন নৌকাটি টেকনাফে ফেরার সময় বিকেল ৪টার দিকে সাগর ও নাফ নদের মোহনায় নাইক্ষ্যংদিয়ায় পৌঁছলে মিয়ানমারের বিজিপির কয়েক সদস্য একটি স্পিডবোট থেকে গুলি ছুড়তে ছুড়তে নৌকার দিকে আসতে থাকে। কবীর জানান, তারা তখন ইঞ্জিন বন্ধ করে দুই হাত উপরে তুলে দাঁড়িয়ে পড়েন। বিজিপি সদস্যরা স্পিডবোট থেকে এসে তাদের নৌকায় ওঠে। তার পর নির্বিচারে সবাইকে মারধর করতে থাকে।
এ সময় সাদ্দাম নৌকার কাগজপত্র নিয়ে দেখাতে গেলে তারা সেগুলো নদীতে ছুড়ে ফেলে দিয়ে সাদ্দামকে পেটাতে শুরু করে। তার হাত-পা ভেঙে ফেলা হয়। সাদ্দাম চিৎকার করে কাঁদতে থাকলে বিজিপি সদস্যরা রাইফেল দিয়ে প্রচন্ড জোরে বাড়ি দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এর পর তারা অজ্ঞান সাদ্দামকে সাগরে ফেলে দেয়।
কবীর জানান, এ সময় একজন বিজিপি সদস্য চিৎকার করে কোনো একটা অর্ডার করে। তা বুঝতে না পারলেও তাদের লক্ষ্য করে রাইফেল উঁচিয়ে গুলি করতে দেখে নৌকার জেলেদের সবাই সাগরে লাফিয়ে পড়েন। সাঁতরে কিছুদূর আসার পর কবীর দেখতে পান, তার পাশে আবুল হাশেমও সাঁতরাচ্ছে।
তারা নাফ নদের বেশ কিছুটা ভেতরে সাঁতরে আসার পর সন্ধ্যায় তাদের একটি ছোট নৌকা উদ্ধার করে শাহপরীর দ্বীপে নিয়ে আসে। বাড়িতে ফিরে কবীর জানতে পারেন, ট্রলার মালিক মোহাম্মদ হোসেনও ফিরতে পেরেছেন। তিনি বর্তমানে কক্সবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে আবদুল্লাহ ও মোহাম্মদ সালাম তখনও নিখোঁজ ছিলেন।
অন্তত লাশটি দেখতে চান সাদ্দামের স্ত্রী: কবীরের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে টেকনাফ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জালিয়াপাড়ায় সাদ্দামের বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী মিনারা বেগম লাকী কাম্নায় লুটিয়ে পড়েন। তার কাম্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। তাদের দুটি শিশুসন্তান বিসমি (৪) আর রেশমী (২) এ সময় তার সঙ্গেই ছিল।
তবে এবার বাংলাদেশিদের উপর হামলা চালাচ্ছে মিয়ানমারের বাহিনী। সমকালের সংবাদের বরাতে এর বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
সাগরের বুকে মাছ ধরছিল ওরা। হঠাৎ গুলি করতে করতে জেলে নৌকাটি থামিয়ে তাতে উঠে এলো মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। প্রচন্ড মারধর করতে লাগল বাংলাদেশি জেলেদের। পিটিয়ে ভেঙে ফেলল মো. সাদ্দামের (২৬) দুই হাত ও দুই পা। রাইফেল দিয়ে আঘাত করতে করতে তার মাথা ফাটাল। প্রচুর রক্তপাতে জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন সাদ্দাম। তাকে সাগরের বুকে ফেলে দিল বিজিপি সদস্যরা। উত্তাল সাগরে সঙ্গে সঙ্গে ডুবে গেলেন সাদ্দাম।
এবার জেলেদের দিকে ফিরে সরাসরি গুলি চালাতে লাগল ওরা। আতঙ্কিত জেলেরা সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লেন সাগরের বুকে। তাদের মধ্যে কবীর আহম্মেদ ও মোহাম্মদ হোসেন সাঁতরে নাফ নদের অনেকটা ভেতরে চলে আসতে পারেন। পরে একটি জেলে নৌকা উদ্ধার করে তাদের। গত সোমবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে বঙ্গোপসাগর ও নাফ নদের মোহনা নাইক্ষ্যংদিয়াতে।
এভাবে মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা এবার অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করেছে নিরীহ বাংলাদেশি জেলেদের ওপর। গত তিন দিনে কমপক্ষে ৬টি জেলে নৌকার ওপর গুলি চালিয়েছে তারা।
গত সোমবারের ঘটনায় নিহত যুবক সাদ্দাম টেকনাফ শহরের দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনরা কাঁদছেন। সাদ্দামের দুটি শিশুসন্তান তখনও বুঝতে পারেনি কী ঘটেছে। তারা তাদের বাবার জন্য অপেক্ষা করছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীর কথা: নিষ্ঠুরতার শিকার ওই নৌকা থেকে পালিয়ে আসা যুবক কবীর আহম্মেদের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার সকালে কথা হয়। তিনি তখন টেকনাফ পৌর এলাকার শিলবনিয়া পাড়ায় নিজের বাসায় শুয়ে কাতরাচ্ছিলেন। তার সারা শরীরে মারধরের দাগ। দীর্ঘ পথ সাঁতরে অনেকটা ক্লান্তও তিনি। মাত্র ১৪ ঘণ্টা আগে যে বিভীষিকা নেমে এসেছিল, সে সবের দুঃসহ স্ট্মৃতি অসুস্থ করে তুলেছে তাকে। সাদ্দামকে নিজের চোখে খুন হতে দেখেছেন তিনি।
কবীর জানান, পেশায় জেলে হলেও তার নিজের কোনো নৌকা নেই। স্থানীয় জেলে মোহাম্মদ হোসেনের নৌকায় মজুরি খাটেন তিনি। গত সোমবার সকালে মোহাম্মদ হোসেন (৩০) মাছ কিনতে নৌকা নিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যান।
তিনিসহ মোট পাঁচজন নৌকার মালিকের সঙ্গে ছিলেন তখন। হোসেন এবং কবীর ছাড়াও ছিলেন নৌকার চালক আবদুল্লাহ (২৭), মোহাম্মদ সালাম (২৪), কবীর আহম্মেদ (২৬) ও সাদ্দাম (২৬)। সকাল ৯টায় তারা নৌকা নিয়ে কায়েকখালী বাজার থেকে সেন্টামার্টিনের উদ্দেশে রওনা হন। মাছ কিনে বিকেল ৩টায় ফেরার সময় তাদের সঙ্গে সেন্টমার্টিন থেকে পরিচিত আবুল হাশেমও (২৯) যোগ দেন।
ছয়জনকে নিয়ে ইঞ্জিন নৌকাটি টেকনাফে ফেরার সময় বিকেল ৪টার দিকে সাগর ও নাফ নদের মোহনায় নাইক্ষ্যংদিয়ায় পৌঁছলে মিয়ানমারের বিজিপির কয়েক সদস্য একটি স্পিডবোট থেকে গুলি ছুড়তে ছুড়তে নৌকার দিকে আসতে থাকে। কবীর জানান, তারা তখন ইঞ্জিন বন্ধ করে দুই হাত উপরে তুলে দাঁড়িয়ে পড়েন। বিজিপি সদস্যরা স্পিডবোট থেকে এসে তাদের নৌকায় ওঠে। তার পর নির্বিচারে সবাইকে মারধর করতে থাকে।
এ সময় সাদ্দাম নৌকার কাগজপত্র নিয়ে দেখাতে গেলে তারা সেগুলো নদীতে ছুড়ে ফেলে দিয়ে সাদ্দামকে পেটাতে শুরু করে। তার হাত-পা ভেঙে ফেলা হয়। সাদ্দাম চিৎকার করে কাঁদতে থাকলে বিজিপি সদস্যরা রাইফেল দিয়ে প্রচন্ড জোরে বাড়ি দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এর পর তারা অজ্ঞান সাদ্দামকে সাগরে ফেলে দেয়।
কবীর জানান, এ সময় একজন বিজিপি সদস্য চিৎকার করে কোনো একটা অর্ডার করে। তা বুঝতে না পারলেও তাদের লক্ষ্য করে রাইফেল উঁচিয়ে গুলি করতে দেখে নৌকার জেলেদের সবাই সাগরে লাফিয়ে পড়েন। সাঁতরে কিছুদূর আসার পর কবীর দেখতে পান, তার পাশে আবুল হাশেমও সাঁতরাচ্ছে।
তারা নাফ নদের বেশ কিছুটা ভেতরে সাঁতরে আসার পর সন্ধ্যায় তাদের একটি ছোট নৌকা উদ্ধার করে শাহপরীর দ্বীপে নিয়ে আসে। বাড়িতে ফিরে কবীর জানতে পারেন, ট্রলার মালিক মোহাম্মদ হোসেনও ফিরতে পেরেছেন। তিনি বর্তমানে কক্সবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে আবদুল্লাহ ও মোহাম্মদ সালাম তখনও নিখোঁজ ছিলেন।
অন্তত লাশটি দেখতে চান সাদ্দামের স্ত্রী: কবীরের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে টেকনাফ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জালিয়াপাড়ায় সাদ্দামের বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী মিনারা বেগম লাকী কাম্নায় লুটিয়ে পড়েন। তার কাম্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। তাদের দুটি শিশুসন্তান বিসমি (৪) আর রেশমী (২) এ সময় তার সঙ্গেই ছিল।
Comments
Post a Comment