রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতার মুখে
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় তিনি বলেন, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে রোহিঙ্গাদের উপর যে সহিংসতা হয়েছে তা মধ্যাঞ্চলেও বিস্তৃত হতে পারে এবং সেখানে আড়াই লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতার মুখে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠক হচ্ছে। এটাই আট বছরে মিয়ানমার নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম উন্মুক্ত বৈঠক।
গুতেরেস বলেন, রাখাইনে সহিংসতা রোহিঙ্গাদের খুব দ্রুতই বিশ্বের বড় উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠীতে পরিণত করেছে, যা মানবিকতা ও মানবাধিকারের জন্য ‘দুঃস্বপ্নের’ জন্ম দিয়েছে।
“পালিয়ে আসা, যাদের বেশিরভাগ নারী, শিশু ও বয়স্ক, তাদের কাছ থেকে আমরা রক্ত হিম করা বক্তব্য পেয়েছি।
“তাদের বর্ণনায় নির্বিচারে গুলিবর্ষণ, বেসামরিকদের বিরুদ্ধে ভূমি মাইন ব্যবহার ও যৌন সহিংসতাসহ অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও মানবাধিকারের গুরুতর লংঘনের কথা বলে।”
রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার জবাবে গত ২৫ অগাস্ট রাখাইনে নতুন করে দমন অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তাদের সহিংসতার মুখে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া না মেলার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সুইডেন, মিশর, সেনেগাল ও কাজাখস্তানের অনুরোধে নিরাপত্তা পরিষদ এদিন বৈঠকে বসে।
রাখাইনে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে অবিলম্বে ত্রাণ সংস্থাগুলোকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন গুতেরেস। জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের বর্তমান অবস্থানে উদ্বেগ জানিয়েছেন তিনি।
এই সংকটের কারণে প্রতিবেশী দেশগুলোসহ পুরো অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক অসন্তোষের ঝুঁকি দেখা দেওয়ার বিষয়েও সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহসাচিব।
হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, দশকের পর দশক শোষণ-বৈষম্যের শিকার হওয়ায় রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে চরমপন্থার উত্থান ঘটতে পারে।
রাখাইন পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত দেশটির কাছে অস্ত্র বিক্রি না করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিক্কি হেলি।
Comments
Post a Comment