প্রতিবাদী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার "নজিরবিহীন’ দ্রুততায় বিচার আজ রায়"
ফেনীর সোনাগাজীতে প্রতিবাদী মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে রায় ঘোষণা করতে পারেন।
ঘটনার মাত্র সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে এবং মাত্র ৬১ কার্যদিবসে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আলোচিত এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার বিষয়টিকে ‘নজিরবিহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন ফেনী বারের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২৭ জুন থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। মামলার ৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য দেন। বাকি চারজনের মধ্যে একজন বিদেশে থাকায় এবং তিনজনের সাক্ষ্য অন্য সাক্ষীদের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যাওয়ায় তাঁদের সাক্ষ্যগ্রহণের প্রয়োজন হয়নি।
গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে নুসরাতকে মাদরাসার প্রশাসনিক ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ২৮ মে ১৬ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সব আসামি ফেনী কারাগারে আছেন। তাঁরা হলেন—সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, ফাজিল শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন শামীম, নুর উদ্দিন, মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সহসভাপতি ও সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি রুহুল আমিন, মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আবসার উদ্দিন, সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর মকসুদ আলম, মাদরাসার বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী হাফেজ আব্দুল কাদের, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, ইফতেখার উদ্দিন রানা, এমরান হোসেন মামুন, মহিউদ্দিন শাকিল, মো. শরিফ, আবদুর রহিম শরিফ, সাইফুর রহমান জোবায়ের ও জাবেদ হোসেন। তাঁদের মধ্যে রুহুল, আবসার, মকসুদ ও মো. শরিফ ছাড়া বাকি ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ও ফেনী বারের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হাফেজ আহাম্মদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ঘটনার সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি চূড়ান্ত পরিণতিতে পৌঁছে গেছে, যা অবিশ্বাস্য। আর মাত্র ৬১টি কার্যদিবসে বিচারক মামলার রায় দিতে যাচ্ছেন, যা নজিরবিহীন।
পিপি আরো বলেন, ‘এ মামলার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ৮৭ জন সাক্ষী এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন—এটা কল্পনাতীত। তাঁরা নিজে থেকেই এসে সাক্ষী দিয়েছেন, তাঁদের তেমন কোনো অনুরোধও করতে হয়নি। শুধু আদালত থেকে সমন পাঠানো হয়েছিল। ’
বাদীপক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু বলেন, ‘মামলাটিতে পুলিশ কর্মকর্তা, পিবিআই কর্মকর্তা, চিকিৎসক, বার্ন ইউনিটের সেবক, সেবিকা, কলেজের অধ্যক্ষ, মাদরাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, আলীম পরীক্ষার্থী, গাড়িচালক, পৌর কাউন্সিলর, অ্যাম্বুল্যান্স চালক, মুদি দোকানি, স্থানীয় বাসিন্দাসহ নানা পেশার লোকজন সাক্ষী দিয়েছেন। কোনো মামলায় এতজন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বেচ্ছায় সাক্ষী দিয়ে গেছেন, যা আমার জানা মতে আর হয়নি। ’ তিনি আরো বলেন, ‘বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। তাই আমরা আশা করছি সকল আসামির সর্বোচ্চ সাজা হবে। ’
রাষ্ট্রপক্ষের আরেক জ্যেষ্ঠ কৌঁসুলি আকরামুজ্জামান বলেন, ‘মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্য, রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আবার রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি খণ্ডন পর্বেও সুচারুভাবে দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট ছিল। ’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী পিবিআইয়ের পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, ‘আমরা সকল প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত, আলামত ও প্রমাণাদি আদালতে পেশ করেছি। রাষ্ট্রপক্ষ যথাযথভাবে সাক্ষীদের আদালতে পেশ করেছেন। এখন রায়ের জন্য অপেক্ষা। ’
‘নুসরাতের বাড়ি ও আদালত এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হবে’
ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী বলেছেন, নুসরাত হত্যা মামলার রায় ঘোষণার আগে-পরে সোনাগাজীতে নুসরাতের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। গতকাল বুধবার তাঁর কার্যালয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরো বলেন, নুসরাতের পরিবারকে কেউ হুমকি-ধমকি দিতে চাইলে বা হয়রানির চেষ্টা করলে তাদেরও আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রায় ঘোষণাকালে ফেনীর আদালত প্রাঙ্গণেও বাড়তি পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলে তিনি জানান।
ঘটনার মাত্র সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে এবং মাত্র ৬১ কার্যদিবসে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আলোচিত এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার বিষয়টিকে ‘নজিরবিহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন ফেনী বারের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২৭ জুন থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। মামলার ৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য দেন। বাকি চারজনের মধ্যে একজন বিদেশে থাকায় এবং তিনজনের সাক্ষ্য অন্য সাক্ষীদের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যাওয়ায় তাঁদের সাক্ষ্যগ্রহণের প্রয়োজন হয়নি।
গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে নুসরাতকে মাদরাসার প্রশাসনিক ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ২৮ মে ১৬ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সব আসামি ফেনী কারাগারে আছেন। তাঁরা হলেন—সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, ফাজিল শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন শামীম, নুর উদ্দিন, মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সহসভাপতি ও সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি রুহুল আমিন, মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আবসার উদ্দিন, সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর মকসুদ আলম, মাদরাসার বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী হাফেজ আব্দুল কাদের, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, ইফতেখার উদ্দিন রানা, এমরান হোসেন মামুন, মহিউদ্দিন শাকিল, মো. শরিফ, আবদুর রহিম শরিফ, সাইফুর রহমান জোবায়ের ও জাবেদ হোসেন। তাঁদের মধ্যে রুহুল, আবসার, মকসুদ ও মো. শরিফ ছাড়া বাকি ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ও ফেনী বারের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হাফেজ আহাম্মদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ঘটনার সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি চূড়ান্ত পরিণতিতে পৌঁছে গেছে, যা অবিশ্বাস্য। আর মাত্র ৬১টি কার্যদিবসে বিচারক মামলার রায় দিতে যাচ্ছেন, যা নজিরবিহীন।
পিপি আরো বলেন, ‘এ মামলার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ৮৭ জন সাক্ষী এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন—এটা কল্পনাতীত। তাঁরা নিজে থেকেই এসে সাক্ষী দিয়েছেন, তাঁদের তেমন কোনো অনুরোধও করতে হয়নি। শুধু আদালত থেকে সমন পাঠানো হয়েছিল। ’
বাদীপক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু বলেন, ‘মামলাটিতে পুলিশ কর্মকর্তা, পিবিআই কর্মকর্তা, চিকিৎসক, বার্ন ইউনিটের সেবক, সেবিকা, কলেজের অধ্যক্ষ, মাদরাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, আলীম পরীক্ষার্থী, গাড়িচালক, পৌর কাউন্সিলর, অ্যাম্বুল্যান্স চালক, মুদি দোকানি, স্থানীয় বাসিন্দাসহ নানা পেশার লোকজন সাক্ষী দিয়েছেন। কোনো মামলায় এতজন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বেচ্ছায় সাক্ষী দিয়ে গেছেন, যা আমার জানা মতে আর হয়নি। ’ তিনি আরো বলেন, ‘বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। তাই আমরা আশা করছি সকল আসামির সর্বোচ্চ সাজা হবে। ’
রাষ্ট্রপক্ষের আরেক জ্যেষ্ঠ কৌঁসুলি আকরামুজ্জামান বলেন, ‘মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্য, রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আবার রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি খণ্ডন পর্বেও সুচারুভাবে দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট ছিল। ’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী পিবিআইয়ের পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, ‘আমরা সকল প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত, আলামত ও প্রমাণাদি আদালতে পেশ করেছি। রাষ্ট্রপক্ষ যথাযথভাবে সাক্ষীদের আদালতে পেশ করেছেন। এখন রায়ের জন্য অপেক্ষা। ’
‘নুসরাতের বাড়ি ও আদালত এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হবে’
ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী বলেছেন, নুসরাত হত্যা মামলার রায় ঘোষণার আগে-পরে সোনাগাজীতে নুসরাতের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। গতকাল বুধবার তাঁর কার্যালয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরো বলেন, নুসরাতের পরিবারকে কেউ হুমকি-ধমকি দিতে চাইলে বা হয়রানির চেষ্টা করলে তাদেরও আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রায় ঘোষণাকালে ফেনীর আদালত প্রাঙ্গণেও বাড়তি পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলে তিনি জানান।
Comments
Post a Comment